ইমরুল কায়েস এর কবিতা
অনুবাদ: ফিরোজ মাহমুদ
অনুপম রাত-০১
পৃথিবীর মানুষ তোমরা দেখো আমার প্রিয়তমার বিরহ,
সীমাহীন কষ্টের উপস্থাপনা ঘোর তমসাচ্ছন্ন রাত যেনো
ভয়ানক কিয়ামত কিংবা দুর্দমনীয় সমুদ্রের তরঙ্গায়িত
একরাশ দীর্ঘশ্বাস।
বেদনার স্তর বিন্যাসঃ যন্ত্রণার বাসুডিনে ঘেরা
পর্দাগুলো যেনো তুর পাহাড়ের জ¦লন্ত প্রস্তাবনা।
বাণবিদ্ধ রাত্রির খিলানে দাঁড়িয়ে আহত পাখির কন্ঠে
আহ্বান ধ্বনি-“হে রাত্রি, তুমি প্রসব করো প্রশান্ত প্রভাত
কিংবা রক্তিম সূর্য, কারণ তোমরা তো যমজ বোন।”
আর রাত্রি সকল খোদার প্রতিজ্ঞার মতোই অনড়।
নিটোল নীলিমার তারকা রাজি-যা ইয়াযবুল পর্বতের
গায়ে শেকলাবদ্ধ যেনো ব্যথিত চিত্তের হাহাকার
উগড়ে দেয় বিস্ময়ের অগ্নিলাভা।
সমুজ্জল অশ্ব-০২
প্রায়শই তাজা হাওয়ার স্নান পর্বের জলাঞ্জলিতে
আমি হয়ে যাই পৃথিবীর অনুগত ছাত্র।
হালকা পশমে আবৃত দ্রুতগামী ঘোড়াটি আমাকে
বয়ে নিয়ে চলে আকাশ-বাতাস এবং অন্তরের মগজে যেনো
অলৌকিক বোরাক।
যখন প্রত্যুষের অতিথি পাখি রাত্রির ওড়না টানিয়ে
দেখে সোনালী স্বপ্ন।
আমার চৌকস বাহন দ্রুততার এক চরম উপস্থাপনা
যেনো পাহাড়ের চূড়া হতে নিক্ষিপ্ত পাথরের উল্কাপিন্ড।
আর তুলার সংজ্ঞায় বিশ্লেষিত আনাড়ি সওয়ারী,
অথচ বাতাসে ওড়ে অভিজ্ঞ নভোচারীর
অনুগত পোশাক-আশাক।
আমার সুদর্শন সঙ্গীটির কোমড় যেনো
চঞ্চলা হরিণীর বায়োডাটা।
তার পায়ের নালী উটপাখির
মসৃণ পায়ের নালীর মতো।
ক্ষিপ্রতায় অনুপম শিল্পী যেমন
রাজকীয় বাঘ কিংবা পন্ডিত শেয়াল।
স্বাস্থ্যল শিকার-০৩
অতঃপর আমাদের ভূগোলে আবিষ্কৃত বন্যপশুর পাল।
গাভীগুলো রাতের বোরখায় আবৃত যেনো
রেশমী চাঁদর কিংবা চঞ্চলা যুবতী সাহস
প্রদক্ষিণরত দুয়ার নামক মূর্তির নিকানো উঠোন
আমার বাধ্যগত ঘোড়াটি অধীর উন্মত্ততায়
লুফে নেয় এক একটি গাভী কিংবা ষাঁড়।
অথচ সে অনড় যেনো সাহারা মরুভূমিতে
পাহাড়ি মিনার।
উৎসাহী পাঁচকের কয়লায় কাবাব হয়
সাধনার রাশি রাশি গোশত।
পাতিলে পাক করা গোশতগুলো শশ্রুষা দেয়
যেনো স্বাস্থ্যল পৃথিবীর বারান্দায়
কুয়াশামুক্ত সাবলীল সম্ভাষণ।
*ইমরুল কায়েস এর বিখ্যাত কাব্যগ্রন্হ -“আস-সাবআ’ আল মুয়াল্লাকা” থেকে অনুবাদ করা হয়েছে।
বিষয়সমূহঃTags: ইমরুল কায়েস, ফিরোজ মাহমুদ
পূর্বের সংবাদ
পরের সংবাদ