মিশে যাই রৌদ্রে
এসো সুঘ্রাণ নেই তরতাজা গোলাপের
এসো চেয়ে দেখি পাখিদের কারুময় ওড়া
এসো কান পেতে শুনি বাতাসের বিরহসঙ্গীত
এসো বুঝে নেই পিঁপড়ের রসালো আলাপ
এসো ভাঁজ করে রাখি বুকের দু:খ
এসো পরিপাটি করে তুলি সময়ের সুবাস
এসো হাঁটু গেড়ে বসে পড়ি সবুজ প্রার্থনায়
এসো খোলাসা করি কুয়াশাসকাল
এসো অঙ্কিত হই প্রণয়ের লালরঙে
এসো লিপিবদ্ধ হই জমাট খাতায়
এসো হাসি দিয়ে ভরে তুলি অন্ধকার
এসো মুছে দেই কমনীয় কায়ার বিলাপ
এসো ফু দিয়ে উড়িয়ে দেই তাবৎ জঞ্জাল
এসো বেদনা ছুঁয়ে মিশে যাই রৌদ্রে।
নিষিদ্ধ পলিথিন
নগরের পথে পথে নিষিদ্ধ পলিথিন এখনও
এখনও পলিথিন উড়ে উড়ে সারগাম গায়
পলিথিন উড়ে উড়ে-ঘুরে ঘুরে ঢুকে পড়ে
সভ্যতার দালানে, শোকেসে, আলমিরায়-
ইস্ত্রিকরা সিল্কের ড্রয়ারে
পলিথিন পরম যত্নে ঘুমায় রমণীর শীতলঘরে!
এখনও পলিথিন দিবালোকে বুকটান করে হেঁটে চলে
কথা বলে, খুলে দেয় সব প্রতারণার গিঁট
পলিথিন পাখনা মেলে সাদর সম্ভাষণ জানায় নপুংসক রাত
পলিথিন বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখায় স্বজাতির উচ্চ ফলনশীল মৌলাধিকারে।
এখনও পলিথিন মিষ্টির বাকসে বসে রসের সিরা খায়।
সবুজ অংক
ওরা পুননির্মাণ জানে না
যা ভেঙে যায় তা দেখে দেখে বিলাপ করে শুধু
অথচ একজন যোদ্ধাকে পুননির্মাণ জানতে হয়
ভেঙে যাওয়া জাহাজের মাস্তুল ধরে ভাসতে ভাসতে
তৈরি হতে হয় পুনরায় যুদ্ধের জন্য
জানতে হয় বারুদের ছাই থেকে পুনরায় গ্রেনেড
হয়ে ওঠার সবুজ অংক
উত্তপ্ত গলিত লাভা ছুটে আসাকে মথিত করে
এগিয়ে যেতে হয় সামনে
জানতে হয় মৃত্যুগুহায় রাত্রীযাপন…
আর যারা জানে, তারাই এগিয়ে থাকে সবসময়
তাদের ছুঁতে পারে না
ভয়
দ্বিধা
দুর্ভোগ
তারা নি:সংকোচে পাড়ি দেয় ঘূর্ণির সমুদ্র।
মুখোমুখি
পুকুরের কিনারে দাঁড়িয়ে যে সমুদ্র দেখার
অহংকার করে সে কেমন পুরুষ?
কেমন বাহাদুর, যে জোনাকির মিটিমিটি
আলোয় সুন্দরী চাঁদের কথা ভুলে যায়…
নক্ষত্র কিংবা নক্ষত্রপুঞ্জের খবর কি সে রাখে?
আদৌ ভাবে এই মহাবিশ্ব কতো বৃহৎ-বিশাল
আকাশে-বাতাসে প্রতিদিন প্রতিমুহূর্তে
ঘটে যাচ্ছে কতো রহস্যময় লীলা…!
দালানের ছাদের নিচে যার একরত্তি গরম
সহ্য হয় না, সামান্য তাপ যার এতো ভয়!
সে কী করে সূর্যের মুখোমুখি হবে?
কী করে দেখবে আলোর মহা বিস্ফোরণ?
মাছরাঙা পাখিটার মতো
আমাকে যে বোঝে ঝরাপাতার মধ্য দিয়েই বুঝুক
আমাকে যে ভাবে শ্রাবণের বর্ষণের মধ্য দিয়েই ভাবুক
আমাকে যে খোঁজে- হারানো নাকফুলের মতো খোঁজে
সে বেদনার ঢেউ ভেঙে ভেঙে
অবিরাম ঢেউ ভেঙে ভেঙে
কাদামাটির অতলে গিয়েই খুঁজুক।
আমাকে যে চায় অথবা প্রত্যাশা করে
ঘাটপাড়ে বসে থাকা ওই মাছরাঙা পাখিটার মতো
সে যেনো একধ্যানে দাঁড়িয়ে থাকে- দাঁড়িয়েই থাকে
মধ্যরজনীর নিষ্পাপ জানালা খুলে।
বিষয়সমূহঃTags: রেদওয়ানুল হক
পূর্বের সংবাদ
পরের সংবাদ